নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় যৌন হেনস্থার শিকার ওই ছাত্রীর বাবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক আবু হাসানকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। উপজেলার হোসেনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যায়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু হাসান বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করেন। এছাড়াও সকাল ও বিকেলে বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়ান তিনি। নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রী আবু হাসানের কাছে প্রাইভেট পড়ে। একাকি পেলেই শিক্ষক আবু হাসান ওই ছাত্রীকে যৌন উত্তক্ত ও নানা কুপ্রস্তাব দেন। কয়েকদিন আগে প্রাইভেট পড়ানো শেষে শিক্ষক আবু হাসান ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বুধবার ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর শিক্ষক আবু হাসানের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির জরুরী সভা ডাকা হয়। কমিটির সদস্যরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক আবু হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষক আবু হাসানের বিরুদ্ধে অন্যান্য অন্য ছাত্রীদের উত্তপ্ত করার অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, শিক্ষক আবু হাসানের কাছে প্রাইভেট পড়েন তার মেয়ে। বিদ্যালয়ের ক্লাসে ও প্রাইভেটে দুই জায়গায় যৌন হয়রানি করেন ওই শিক্ষক। মেয়েকে একা পেলেই নানা রকম খুব প্রস্তাব ও অশালীন কথাবার্তা বলেন। মেয়ে যখন বাড়িতে থাকে তখন মোবাইল ফোন কল করেন এবং মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করেন। বুধবার প্রাইভেট পড়া শেষে মেয়েকে একা পেয়ে শিক্ষক আবু হাসান মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি ওই শিক্ষকের বিচার চাই। তাই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক আবু হাসান বলেন, এ ধরনের কর্মকান্ডের সাথে তিনি জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়া সহ ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করে শিক্ষক আবু হাসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন তার অভিভাবক। বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল করিম রানা বলেন, বুধবার ওই ছাত্রীর অভিভাবক শিক্ষক আবু আহসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরী সভা করা হয়। শিক্ষক আবু হাসানের উপস্থিত বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলা হয়। যৌন হয়রানীর ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষক আবু হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।